ইমেইল সিগনেচার কী এবং কিভাবে তৈরি করে? কেন দরকার? জানুন
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
আসসালামু আলাইকুম।
আশা করি অনেক ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও অনেক ভালো আছি।
ইমেইল সিগনেচার কী এবং কিভাবে তৈরি করে? কেন দরকার? জানুন।
ইমেইল নিয়মিত ব্যবহার করে থাকলে নিশ্চয়ই আপনি ইমেইল সিগনেচার সম্পর্কে একটুও হলে জেনে থাকবেন। এটি সাধারণত ইমেইল এর শেষের দিকে কয়েকটি লাইন জুড়ে থাকে। সেখানে ইমেইল প্রেরকের নাম, ফোন নম্বর এবং আরো অন্যান্য তথ্য থাকে। তবে ইমেইল সিগনেচার শুধু আপনার সাথে যোগাযোগ এর তথ্য দেয়ার জন্য নয়, আরো অনেক কাজ এ এটি ব্যবহার করা হয়। একটি ভালো ইমেইল সিগনেচার আপনার ব্যবসার বা কাজের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। আপনার পণ্য সম্পর্কে সবাইকে জানাতে বা কোনো বিশেষ অফারে বিজ্ঞাপন দিতে কিংবা আপনার ওয়েবসাইট এ ভিজিটর বাড়াতেও ইমেইল সিগনেচার সাহায্য করতে পারে। এই আর্টিকেল এ আমি আলোচনা করবো কিভাবে ইমেইল সিগনেচার ব্যবহার করতে হয় এবং এটি কি কি কাজে লাগে।
ইমেইল সিগনেচার কী?
ইমেইল সিগনেচার একটি ইমেইলের অংশ যখন আপনি ইমেইল পাঠাবেন সেখানে যুক্ত হয়ে যাবে একা একায়। ইমেইল সিগনেচারে থাকতে পারে টেক্সট, ইমেজ বা লিংক। ইমেইল সিগনেচার সাধারণত ব্যবহার করা হয় ইমেইলে তথ্য আদান-প্রদান করতে। এখানে আপনার নাম, ফোন নম্বর এবং আপনার পদের নামও থাকতে পারে। তবে এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা যায়। ইমেইল সিগনেচার আসলে আপনার ভিজিটিং কার্ডের মতো করেই কাজ করে যা আপনার পরিচয়কে ভালভাবে প্রতিটি ইমেইল এ তুলে ধরে। ফলে সহজে প্রাপক আকৃষ্ট হতে পারে। এবং আপনার পূর্ণ পরিচয় জেনে নিতে পারে। তাই ভালো আকর্ষণীয় সিগনেচার বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
কী কী থাকে ইমেইল সিগনেচারে?
ইমেইল সিগনেচার আপনি নিজের ইচ্ছামত সুন্দর করে সাজিয়ে নিতে পারবেন। এই আর্টিকেল এ আমি এমন কিছু জিনিসের কথা বলবো যা আপনি আপনার ইমেইল সিগনেচারে রাখতে পারেন।
সাইনঅফ
সাইনঅফ হচ্ছে একদম শেষের দিকে একটি ছোট বাক্য বা শব্দ যেটা আপনি আপনার নাম লেখার আগে লিখে থাকেন। যেমন: "Sincerely," "Best Wishes," Regards" ইত্যাদি।
অনেকে ইমেইল লেখার শেষে সাইনঅফ দিয়ে থাকেন। তবে আপনি চাইলে এটি আপনার নামের আগেও ব্যবহার করতে পারবেন। সাইনঅফ হিসেবে টেক্সট অথবা ইমেজ এর যেকোনো একটি ব্যবহার করতে পারবেন।
যোগাযোগের তথ্য
যোগাযোগের তথ্য দেয়া সিগনেচারের মূল উদ্দেশ্য। তাই এটি সবার আগে করা উচিত। আপনি যাকে মেইল করেছেন তার উপর নির্ভর করে আপনার সিগনচারে যোগাযোগ এর বিভিন্ন তথ্য যুক্ত করতে পারেন। আপনি আপনার নাম, পদ, ফোন নম্বর, ব্যবসার ঠিকানা ইত্যাদি জিনিস এখানে দিতে পারেন।
ব্রান্ডিং
আপনার ব্যবসায়িক লোগো, সেই সাথে মিলিয়ে কালার ডিজাইন ও ফন্ট রাখতে পারেন। এটি আপনার ব্যবসার আলাদ পরিচয় বহন করে। এবং মানুষের কাছে আপনার ব্রান্ডকে সহজে তুলে ধরতে পারবে। তাই ইমেইল সিগনেচার ডিজাইন এর ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে।
সোশ্যাল মিডিয়া লিংক
আপনি আপনার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া লিংক যুক্ত করে দিতে পারবেন এই ইমেইল সিগনেচার এর মাধ্যমে। প্রতিটি মিডিয়া প্লাটফর্ম আইকনের সাথে লিংক যুক্ত করে দিলেই সহজে আইকনের উপর ক্লিক করে আপনার প্রফাইলে যাওয়া সম্ভব।
ছবি
অনেকে আছেন যারা কিনা নিজেদের ছবি যুক্ত করাে দেওয়াকে পছন্দ করেন। এতে করে ক্রেতার সাথে সহজে একটি সম্পর্ক তৈরি করা যায়। তাই আপনার কাজের উপর পছন্দমত নিজের ছবি যুক্ত করে দিতে পারেন।
অন্যান্য ছবি বা ভিডিও
শুু নিজের ছবি নয়, বরং আপনি চাইলে আপনার কোনো কাজের ছবি বা ভিডিও যুক্ত করে দিতে পারেন যার মাধ্যমে বিভিন্ন অফার, ইভেন্ট ইত্যাদি সম্পর্কে সহজে জানতে পারেন।
ইমেইল সিগনেচার কেন দরকার?
নিজস্ব যোগাযোগে ইমেইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে ইমেইল সিগনেচার খুব একটা গুরুত্ব বহন না করলেও পেশাদার ক্ষেত্রে ইমেইল পাঠাতে ইমেইল সিগনেচার এর অনেক গুরুত্ব রয়েছে। এতে করে আপনি প্রাপককে বাড়তি তথ্য দিতে পারবেন। এবং একটি ভালো অভিজ্ঞতাও দিতে পারবেন। ইমেইল সিগনেচার ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ নিয়ে আলোচনা করি।
পেশাদারিত্ব
ইমেইল সিগনেচার ঠিকভাবে ব্যবহার করলে তা আপনার ইমেইলকে আরো পেশাদার করে তুলতে পারে। এর মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে আপনার পেশা সম্পর্কে বিশ্বাস জন্মে এবং গুরুত্ব সহকারে আপনার ইমেইল বিবেচনা করতে সহায়তা করে। আপনার প্রতিষ্ঠানের লোগো, ব্রান্ডিং ও ওয়েবসাইট লিংক থাকলে সহজে তা মানষকে ইমেইল গুরুত্ব বোঝাতে পারে।
কর্মদক্ষতা
ইমেইল সিগনেচার আপনার সময় বাচায় এবং প্রতি ইমেইল এ বারবার আপনার পরিচয় দেওয়ার ঝামেলা থেকে মুক্তি দেয়। তাই আপনি সহজে আরো বেশি মানুষকে ইমেইল করতে পারবেন।
ব্রান্ডিং
আপনার ব্যবসা বা ব্রান্ডের লোগো যুক্ত করার মাধ্যমে মানুষের কাছে আপনার ব্রান্ডকে আরও বেশি জনপ্রিয় করে তুলতে ইমেইল সিগনেচার বেশ ভালো কাজ করে। ফলে মানুষের কাছে আপনার ব্রান্ড নিয়ে ভালো অভিজ্ঞতা হয় এবং আপনার ব্যবসার উন্নতিতে সাহায্য করে।
ট্রফিক ও লিড জেনারেশন
ওয়েবসাইটে ট্রাফিক ও লিড বাড়াতে ইমেইল মার্কেটিং সবচেয়ে ভালো উপায়। আর এক্ষেত্রে ইমেইল সিগনেচার বেশ ভালো কাজ করে। আপনার ওয়েবসাইটের লিংক যুক্ত করে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে অনেক ট্রাফিক আনতে পারবেন।
ইমেইল সিগনেচার তৈরি করার নিয়ম
প্রতিটি ইমেইল ক্লায়েন্টেই সিগনেচার তৈরির জন্য আলাদা অপশন পেয়ে যাবেন। এখন আমরা জিমেইল ব্যবহার করে কিভাবে সহজে আপনি ইমেইল সিগনেচার তৈরি করে ফেলতে পারেন সেটা জানবো। এজন্য আপনাকে নিচের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।
- প্রথমে ব্রাউজার থেকে জিমেইলে চলে যান। লগইন করা না থাকলে লগইন করে নেন।
- এবার আপনার ইমেইল ইনবক্স ওপেন হবে। উপরে ডান কোনায় Setting দেখতে পারবেন, সেখানে ক্লিক করুন।
- ডানপাশে নতুন একটি পেজ দেখতে পারবেন। এখানে See all Setting এর উপর আপনাকে ক্লিক করতে হবে।
- এবার সেটিং General ট্যাব আপনার সামনে চলে আসবে। এবার নিচের দিকে একটু স্ক্রল করলে Signature নামের সেই বিখ্যাত অপশনটা খুঁজে বের করতে হবে।
- এরপর এখানে Create New অপশনে ক্লিক করলে আপনার সামনে নতুন একটি ডায়ালগ বক্স চলে আসবে।
- এবার এই সিগনেচার পরে সহজে খুঁজে পেতে আপনার ইচ্ছামতো একটি নাম দিয়ে Create এ ক্লিক করবেন।
- এবার আপনার নতুন সিগনেচারের নামের পাশেই একটি বক্স দেখতে পারবেন, নিজের সিগনেচার তৈরি করার জন্য। এই বক্সে আপনি লিংক, ইমেজ, টেক্সট ইত্যাদি সহ নিজের মতো সাজিয়ে নতুন সিগনেচার তৈরি করে নিতে পারবেন।
- এবার স্ক্রল করে পেজে একটু নিচে চলে যান। সেখানে Save Change বাটনের উপর ক্লিক করে সিগনেচারটি সেভ করে নিন।
এবার এই সিগনেচার ইমেইল লিখবার সময় ব্যবহার করতে চাইলে:
- কম্পোজ বক্স খুলে নি।
- নিচের দিকে সিগনেচার একটি আইকন দেখতে পারবেন। এটির উপর ক্লিক করুন।
- পূর্বে সেভ করা সিগনেচারটির নাম এখানে দেখতে পারবেন। সেটা সিলেক্ট করে দিন।
- ইমেইলে আপনার সিগনচার যুক্ত হয়ে যাবে।
এভাবে আপনি একসাথে অনেক রকম সিগনেচার আগে থেকে তৈরি করে রেখ আা পরবর্তীতে প্রয়োজনমতো ব্যবহার করতে পারবেন।
সো এই আর্টিকেল এখানে শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
আসসালামু আলাইকুম





